নবান্ন উৎসব(ছুসক추석)

Spread the love

দক্ষিণ কোরিয়ার সবচাইতে বড় দুইটি উৎসব হলো নববর্ষ (সল্লাল 설날) এবং নবান্ন (ছুসক추석)।

নবান্ন উৎসব(ছুসক추석)

ইনসা(শুভেচ্ছা বা ছালাম)

풍요로운 한가위 되세요( ফুংইউরোউন হানগাউই দ্যেসেও। )

즐거운 한가위 되세요 ( জুলগউন হানগাউই দ্যেসেও। )

마음 따뜻한 한가위 보내세요. ( মাউম ততুতহান হানগাউই ফোনেসেও। )

풍성하고 건강한 추석 보내세요. ( ফুংসংহাগো খনগাংহান ছুসক ফোনেসেও। )

 

প্রাচীনকালে দক্ষিণ কোরিয়া একটি কৃষিনির্ভর দেশ ছিল। শরৎ এর শুরুতে ফসল ঘরে তুলে নেওয়া হল একটি উৎসব করত। চন্দ্র মাসের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী অষ্টম মাসের ১৫ তারিখ বড় পূর্ণিমাতে এই উৎসবটি করা হতো। এই উৎসবটি নামই হচ্ছে নবান্ন। দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের কাছে এই ছবিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ছুটি। নববর্ষের ছুটি চাইতে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় কারণ এই সময় দক্ষিণ কোরিয়াতে নাই শীত নাই গরম আবহাওয়া থাকার কারণে পরিবার নিয়ে আনন্দ কোন সময় কাটানোর উপযুক্ত সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার ৭৫ শতাংশ জনগণ তাদের গ্রামের বাড়িতে ছুটে যায়। রাস্তাভর্তি বড় জ্যমের রেকর্ড করে এই ছুটিতে। ১৯৯০ সালের পর থেকে প্রায় প্রতিবছরই দক্ষিণ কোরিয়া এই রেকর্ডটি করে আসছে। উৎসবের উৎপত্তি: এই নবান্ন উৎসবের প্রথা কবে থেকে চালু হয় সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয় তিন রাজ্যের বিস্তারে সময় থেকে এই উৎসবটি চালু হয়ে আসছে। সময়: কোরিয়ার চন্দ্র মাসের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী অষ্টম মাসের ১৫ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে নবান্ন উৎসবের দিন। ইংরেজি হিসেব অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে হয়ে থাকে। চন্দ্র মাসের ১৫ তারিখ তাই এটা পূর্ণিমা রাত হয়ে থাকে।

১৯৮৫ সাল থেকে কোরিয়ায় নবান্ন উৎসবের ছুটি ১ দিন থেকে ৩ দিন করে (১৪,১৫,১৬)

অন্যান্য নাম:

중추মধ্য-শরৎ উৎসব (仲秋), 중추절মধ্য-শরৎ উৎসব (仲秋 節), 가배일গাবায়ে-ইল (嘉 俳 日), 한가위’হান’ মানে ‘বড়’ এবং ‘খাউই’ মানে ‘(কেচি) বিরতী বা কটার মধ্যম’ কর্ম ব্যস্ত বছরে শান্তির বিরতী।, 팔월 대보름(অষ্টমা পূরনীমা) হ্যাঙ্গাবি, 팔월 대보름অষ্টমা মধ্যান্য ইত্যাদি বলা হয়।

বিশেষত্ব:

আধুনিক দক্ষিণ কোরিয়া একসময় কৃষিভিত্তিক রাজ্য ছিল। বছরের এই সময়টাতে কৃষকেরা ফসল কেটে ঘরে তুলতে। সবার ঘরে ফসলের সমৃদ্ধ থাকতো। নতুন ধানের নতুন চাউলের তৈরি পিঠা দিয়ে সবাই আনন্দ করতো। নাই শীত নাই গরম আবহাওয়ার কারণে সবাই এই সময়গুলোতে এক সময় বিভিন্ন রকমের উৎসব আয়োজনে ব্যবস্থা করতো। বর্তমান আধুনিক দক্ষিণ কোরিয়াতে এর গুরুত্ব কমেনি। কর্মব্যস্ততার দক্ষিণ কোরিয়াতে পাঁচ দিনের ছুটি বা এক সপ্তাহ ছুটি অনেক লম্বা ছুটি। তাইতো সবাই পরিবারের সঙ্গে এই ছুটিটা কাঁচাতে গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা হয়। রাস্তায় পড়ে যায় গাড়ি জ্যামে। উড়োজাহাজের টিকিট পাওয়া দুষ্কর। ট্রেনের টিকিট মেলা তো সোনার হরিণের মত। আর জাহাজ তো সবসময় ভর্তি থাকে ‌। নববর্ষের ছুটির সময় শীত থাকার কারণে মানুষ খুব বেশি আনন্দ উল্লাস করতে পারে না। তাই নববর্ষের ছুটির চাইতেও নবান্ন উৎসবের ছুটি দক্ষিণ কোরিয়ান দের কাছে বেশি প্রিয়।

“থদো মাল্গো ত’লদো মাল্গো হাঙ্গাউইমান খাত্থারা (더 도 말고 덜도 말고 한가위만 같아라)”

“গরম নয় শীতও নয় মধ্যামা ছুটি আনন্দময় হোক”।

খাবার:

ছুসকের প্রধান খাবার হল সোংফিয়ন (송편)। চাল দিয়ে তৈরী আমাদের দেশের পিঠার মত এই খাবার অর্ধ চন্দ্রাকৃতির মতো বানিয়ে দেবদারু গাছের পাতা দিয়ে ঢেকে ভাপ দেয়া হয়। “যার সোংফিয়নের আকার সুন্দর হয় তার সুন্দর মেয়ে হবে” বলে কোরিয়ান সমাজে একটি প্রচলিত কথা রয়েছে।

উংসব ও খেলা ধুলা:

널뛰기, নলটৈগী

제기차기, জেগীছাগী

강강술래, গ্যাংগ্যাংসুল্লা(মেয়েরা হাতে হাত রেখে কয়েক জন গোল করে গান )

윷놀이, ইউতনোরী

씨름 등의 놀이 সীরুমদোংই

소싸움·ষাঁড়ের লড়াই

길쌈বয়ন

달맞이চাঁদ দেখা

닭싸움মোরগ লড়াই

(ইউটিউবে খুজে দখতে পারেন)

ঐতিহ্য:

ছুসক추석হানবক পরিধান করে এবং নতুন ধান থেকে তৈরি সোংফিয়ন (송편) এবং বিভিন্ন ধরণের তাজা ফল এবং তারো স্যুপের মতো। ফসল কাটার জন্য ধন্যবাদ জানানো । এছাড়াও, আপনার প্রতিবেশীদের সাথে সুস্বাদু খাবার ভাগ করা এবং একটি সুন্দর দিন কাটান। যতই দরিদ্র বা দরিদ্র মানুষ থাকুক না কেন, তারা খাবার ভাগ করে নেয় এবং ভাল সময় কাটায়, সব ধরণের শস্য পাকা হয় এবং উজ্জ্বল চাঁদনী রাত থাকে।

ছুসক추석 এর আগের দিন পরিবারের মৃত পূর্বপুরুষদের কবর পরিষ্কার করে এবং ছুসক추석 এর দিন বিভিন্ন খাবার এবং ফল দিয়ে জেসা(শান্তি প্রাথনা) করে।

 

এ বছরও করোনা ভাইরাসের জন্য কোরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বড় ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন এর জন্য অনুৎসাহিত করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস যাতে বৃদ্ধি না পায় তার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে এবছর অনুষ্ঠানের জন্য বাইরে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। বাহিরে বের হলেই মাস্ক অবশ্যই পরিধান করা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। বিশেষ করে বাস ট্রেন ও পাবলিক ট্রান্সপোর্টে কঠিন শর্তারোপ করা হয়েছে। প্রত্যেককেই অপর ব্যক্তি থেকে ন্যূনতম এক মিটার দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করার জন্য বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত হাত পরিষ্কার করা এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার জন্য বিশেষভাবে বলা হয়েছে। অসুস্থতার কোন ধরনের লক্ষণ। যেমন: জ্বর সর্দি কাশি এমন কোনো লক্ষণ দেখা গেলেই সঙ্গে সঙ্গে 1399 এ কল করে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আমরা আপনাদের একটি সুখী এবং উপভোগ্য ছুসক এর ছুটি কামনা করছি !

 


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *